ভারতীয় পাসপোর্ট হলো ভারত সরকার কর্তৃক জারি করা একটি ভ্রমণ নথি, যা প্রমাণ করে যে ব্যক্তি ভারতের নাগরিক। এর গুরুত্ব হলো, এটি বিদেশে আপনার পরিচয় ও নাগরিকত্ব প্রমাণ করে এবং আপনাকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের অনুমতি দেয়। এটি ছাড়া আপনি অন্য কোনো দেশে প্রবেশ বা প্রস্থান করতে পারবেন না। তাই আজকের এই পোস্ট থেকে আপনি জেনে নিতে পারবেন যদি আপনি একটি পাসপোর্ট বানাতে চান তবে আপনার কাছে কি কি নথি অবশ্যই থাকতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে?
ঠিকানার প্রমাণ হিসাবে যে যে ডকুমেন্টগুলি দিতে পারবেন-
১. জলের বিল
২. টেলিফোন বিল (ল্যান্ডলাইন বা পোস্টপেইড মোবাইল বিল)
৩. বিদ্যুতের বিল
৪. আয়কর মূল্যায়ন আদেশ (Income Tax Assessment Order)
৫. ভোটার আইডি কার্ড
৬. গ্যাস সংযোগের প্রমাণপত্র
৭. স্বনামধন্য কোম্পানির নিয়োগকর্তার কাছ থেকে লেটারহেডে দেওয়া সার্টিফিকেট
৮. স্ত্রীর পাসপোর্টের কপি (প্রথম এবং শেষ পাতা, যার মধ্যে পারিবারিক বিবরণ এবং আবেদনকারীর নাম পাসপোর্টের ধারকের স্বামী/স্ত্রী হিসাবে উল্লেখ করা আছে) - শর্ত প্রযোজ্য: আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানা স্ত্রীর পাসপোর্টে উল্লিখিত ঠিকানার সাথে মিলতে হবে।
৯. বাবা-মায়ের পাসপোর্টের কপি, নাবালকদের ক্ষেত্রে (প্রথম এবং শেষ পাতা)
১০. আধার কার্ড
১১. ভাড়ার চুক্তিপত্র
১২. চালু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসবুক (শুধুমাত্র তফসিলি পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্ক, তফসিলি প্রাইভেট সেক্টর ভারতীয় ব্যাঙ্ক এবং আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক)
জন্ম তারিখের প্রমাণ হিসাবে যে যে ডকুমেন্টগুলি দিতে পারবেন-
২০২৩ সালের ১লা অক্টোবরের আগে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে (নিম্নলিখিতগুলির মধ্যে যেকোনো একটি সংযুক্ত করুন):
১. জন্ম শংসাপত্র
২. শেষ যে স্বীকৃত বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন বা স্বীকৃত শিক্ষা বোর্ড থেকে ইস্যু করা ট্রান্সফার বা স্কুল লিভিং বা ম্যাট্রিকুলেশন সার্টিফিকেট যেখানে আবেদনকারীর জন্ম তারিখ উল্লেখ আছে
৩. প্যান কার্ড
৪. আবেদনকারীর সার্ভিস রেকর্ডের কপির একটি নির্যাস (শুধুমাত্র সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে) বা পে পেনশন অর্ডার (অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে), যা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্তৃক যথাযথভাবে সত্যায়িত বা প্রত্যয়িত, যেখানে তাঁর জন্ম তারিখ উল্লেখ আছে
৫. ড্রাইভিং লাইসেন্স
৬. ভোটার কার্ড (জন্ম তারিখ সঠিক থাকতে হবে)
৭. লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া বা পাবলিক কোম্পানি কর্তৃক জারি করা পলিসি বন্ড, যেখানে বীমা পলিসির ধারকের জন্ম তারিখ উল্লেখ আছে।
২০২৩ সালের ১লা অক্টোবর বা তার পরে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে (নিম্নলিখিতটি সংযুক্ত করুন):
১. জন্ম শংসাপত্র।
Non-ECR ক্যাটাগরির জন্য যে যে ডকুমেন্টগুলি দিতে পারবেন-
যারা দশম শ্রেণি বা তার বেশি পড়াশোনা করেছেন তারা প্রয়োজনীয় নথি হিসাবে মাধ্যমিক বা উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতার মার্কশিট বা পাস সার্টিফিকেট দিতে পারেন।
এবার অনেকের মনে হতে পারে ECR বা Non-ECR ক্যাটাগরি কি?
ECR (Emigration Check Required) পাসপোর্ট -
মানে: ECR পাসপোর্টধারীদের বিদেশে কাজের জন্য বা নির্দিষ্ট কিছু দেশে ভ্রমণের জন্য ভারত সরকারের "প্রোটেক্টর অফ ইমিগ্র্যান্টস" (Protector of Emigrants - POE) অফিস থেকে অভিবাসন ছাড়পত্র (Emigration Clearance) নিতে হয়। এর কারণ হলো, সরকার চায় বিদেশে যেন ভারতীয় শ্রমিকরা কোনো শোষণ বা সমস্যার সম্মুখীন না হন।
কারা পান: সাধারণত, যারা দশম শ্রেণী (Matriculation) পাশ করেননি অথবা যাদের কোনো উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, তাদের ECR পাসপোর্ট দেওয়া হয়। এছাড়াও, ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের পাসপোর্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে ECR ক্যাটাগরিতে পড়ে।
Non-ECR (Emigration Check Not Required) পাসপোর্ট -
মানে: Non-ECR পাসপোর্টধারীদের বিদেশে ভ্রমণ বা কাজের জন্য ভারত সরকারের কাছ থেকে কোনো অতিরিক্ত অভিবাসন ছাড়পত্র নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। তাদের ভিসা থাকলে তারা সরাসরি বিদেশ ভ্রমণ করতে পারেন।
কারা পান: সাধারণত, যারা দশম শ্রেণী বা তার বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন, যেমন - স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বা অন্যান্য পেশাদার ব্যক্তিরা Non-ECR পাসপোর্ট পান। এছাড়াও, কিছু বিশেষ ক্যাটাগরির মানুষ, যেমন - সরকারি কর্মচারী, ৫০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি, আয়কর প্রদানকারী (এবং তাদের স্ত্রী/সন্তান), বিদেশে তিন বছর বা তার বেশি সময় ধরে বসবাসকারী ব্যক্তি, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে স্থায়ী অভিবাসী ভিসা থাকা ব্যক্তিরা Non-ECR পাসপোর্টের জন্য যোগ্য।
এবার জেনে নিন পাসপোর্ট আবেদন করতে কত টাকা লাগবে?
সাধারণ পাসপোর্ট (১০ বছর মেয়াদ):
৩৬ পাতা: ₹১,৫০০ (সাইবার ক্যাফের খরচা আলাদা)
৬০ পাতা: ₹২,০০০ (সাইবার ক্যাফের খরচা আলাদা)
তৎকাল পাসপোর্ট (১০ বছর মেয়াদ):
৩৬ পাতা: ₹৩,৫০০ (₹১,৫০০ সাধারণ ফি + ₹২,০০০ তৎকাল ফি) (সাইবার ক্যাফের খরচা আলাদা)
৬০ পাতা: ₹৪,০০০ (₹২,০০০ সাধারণ ফি + ₹২,০০০ তৎকাল ফি) (সাইবার ক্যাফের খরচা আলাদা)
তাহলে এবার জেনে নিন পাসপোর্ট আপনার হাতে পেতে কত দিন সময় লাগতে পারে?
সাধারণ পাসপোর্ট: সাধারণত ৩০ থেকে ৪৫ দিন সময় লাগে।
তৎকাল পাসপোর্ট: ১ থেকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্রিয়াকরণ ও বিতরণ করা যেতে পারে (যদি পুলিশ ভেরিফিকেশন পরিষ্কার থাকে এবং সমস্ত ডকুমেন্ট সঠিক থাকে)।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
১) বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট তৈরির আবেদন করতে গেলে ডিজি লকারের মাধ্যমে ডকুমেন্ট আপলোড করতে হয়। তো আপনার যদি আগে থেকেই ডিজি লকার বানানো থাকে তবে সেটা আগে থেকেই জানিয়ে দেবেন।
২) আমাদের যদি নতুন করে আপনার ডিজি লকার খুলে আবেদন করতে হয়, তবে ডিজি লকার খোলার জন্য আলাদা পেমেন্ট করতে হবে।
৩) আপনি নিজের ইচ্ছা মত ভেরিফিকেশনের তারিখ পছন্দ করতে পারেন। (সর্বোচ্চ ৪-৫ দিনের মধ্যে)
৪) মনে রাখবেন বর্তমান সিস্টেমে আবেদনকারীর কোনো ছবি বা সই আপলোড করতে হয় না। ভেরিফিকেশনের সময় পাসপোর্ট অফিসেই তারা তুলে নেবে।
৫) ভেরিফিকেশনের দিন আপনাকে সকল অরিজিনাল ডকুমেন্ট নিয়ে কমপক্ষে দেওয়া সময়ের ৩০ মিনিট আগে সেখানে অর্থাৎ পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হতে হবে।
৬) মনে রাখবেন ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন ও পুলিশ ভেরিফিকেশনে আমাদের কোনো হাত নেই। আমরা শুধুমাত্র আপনার পাসপোর্ট তৈরির আবেদন করে দিয়ে থাকি ও আবেদন ফি জমা করে দিয়ে থাকি।
এছাড়াও অন্য কোনো বিষয় জানতে আমাদের WhatsApp করুন 👉 ক্লিক করুন
প্রতিদিন আপডেট পাওয়ার জন্য আমাদের সাইবার ক্যাফের সাথে যুক্ত হতে ক্লিক করুন
আরও আপডেট পেতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ- ক্লিক করুন